একতাই বল
ঘুঘু আর ঘুঘুর বউ কোনো এক গাছে বাসা বেঁধেছিল। একদিন এক হাতি পরিশ্রান্ত হয়ে সেই গাছের নীচে এসে বসল। বিশ্রাম শেষ করার পর গাছটিকে শুড় দিয়ে ভেঙে ফেলল। ঘুঘু আর ঘুঘুর বউ কোনো রকমে রক্ষা পেল, কিন্তু তাদের ডিমগুলো ভেঙে গেল। সেই দুঃখে তারা কাঁদছিল।
কান্না শুনে প্রতিবেশী কাঠঠোকরা সেখানে এসে হাজির হল। কাঠঠোকরা জানতে চাইল কী হয়েছে? তোমরা কাঁদছ কেন? ঘুঘু আর ঘুঘুর বউ সমস্ত ঘটনা খুলে বলল। কাঠঠোকরা বলল—কেঁদে কী লাভ? কেঁদে কোনো ফল হবে । এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই হবে। জব্দ করতে হবে হাতিকে। ঘুঘু বলল—তা কী করে সম্ভব? আমরা হাতির সঙ্গে পেরে উঠব কী করে?
কাঠঠোকরা বলল — বুদ্ধি দিয়ে শত্রুকে জয় করতে হবে। এজন্য বন্ধুদের সাহায্য চাই। চল, আমরা আমাদের বিশিষ্ট বন্ধু মধুকরের কাছে যাই। এ বিষয়ে তার সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। দুজনেই গেল মধুকরের কাছে। গাছের ডালে মস্ত বড়ো মধুকরের চাক। সেখানে মধুকরের সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে পরমার্শ চলল। মধুকর বলল—হাতির শক্তি আছে বলে সে দুর্বলের অনিষ্ট করবে, তা হতে দেওয়া যায় না। চল, আমার বন্ধু মেঘনাদের কাছে। মধুকরের এক ব্যাঙ বন্ধু ছিল। তার নাম মেঘনাদ। সব শুনে ব্যাঙ বলল, একার একা শক্তি কিছুই নয়। আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করব। একতাই বল।
সে আরও বলল — দেখবে, আমরা আমাদের কাজে কৃতকার্য হবই। বন্ধু মধুকর, আজ দুপুরবেলা তোমার গান শোনাবে হাতির কানের কাছে গিয়ে। তোমার সুর শুনে হাতি যেন ঘুমিয়ে পড়ে। আর কাঠঠোকরা, সেই সুযোগে তুমি তোমার ঠোট দিয়ে হাতির দুচোখ অন্ধ করে দেবে। সে তখন অন্ধ হয়ে তৃষ্ণার্ত হবে। আমি এবং আমার সাঙ্গপাঙ্গরা তারস্বরে চিৎকার করব। জলাশয় মনে করে সে আমাদের দিকে এগিয়ে আসবে। গর্তের মধ্যে পড়ে মরবে।
ব্যাঙের পরামর্শ মতো কাজ শুরু হল। দুপুর হয়েছে। হাতি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম করছে। হাতিকে ঘুম পাড়িয়ে দিল মধুকর। গুনগুন গান শোনাল। কাঠঠোকরা হাতির চোখ দুটো তার ঠোট দিয়ে ঠুকরে কানা করে দিল। হাতি লাফিয়ে উঠে কিছুই দেখতে পেল না। ছোটাছুটি করল, দারুণ তৃষ্ণা পেল তার। ব্যাঙ তখন কাদা পুকুরের পাশে সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে তারস্বরে গান গাইতে লাগল। হাতি ব্যাঙের কণ্ঠস্বর অনুসরণ করে জল খেতে গেল। কাদা পুকুরে পড়ে তার আশা মাটি হল। পা আটকে গেল, সে উঠতে পারল না। এভাবে মৃত্যু হল তার।
1 Comments
A2Z Highlights
ReplyDeletehttps://a2zhighlights.blogspot.com
Promote Kore Dau😁